শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১০:৩৩ অপরাহ্ন

অতিরিক্ত সচিব হলেন ৯২ কর্মকর্তা

অতিরিক্ত সচিব হলেন ৯২ কর্মকর্তা

স্বদেশ ডেস্ক: পদোন্নতিযোগ্য ৩৮৭ কর্মকর্তার মধ্য থেকে অতিরিক্ত সচিব হয়েছেন মাত্র ৯২ জন যুগ্ম সচিব। এ ঘটনায় দীর্ঘ চাকরিজীবনে বারবার পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তারা চরম হতাশা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এই বঞ্চিতদের অনেকে চাকরিজীবনের একেবারেই শেষ প্রান্তে। গতকাল মঙ্গলবার এক প্রজ্ঞাপনে ৮৯ জন এবং আরেক প্রজ্ঞাপনে বিদেশে কর্মরত দুজন যুগ্ম সচিবকে পদোন্নতি দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া শিক্ষা ছুটি ও লিয়েনে থাকা আরও তিনজনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তাদের সবাইকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (্ওএসডি) করা হয়েছে। তাদের যোগদানপত্র ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠাতে হবে।
প্রজ্ঞাপন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিসিএস নবম ব্যাচের ২ জন, দশম ব্যাচের ৩ জন, ১১তম ব্যাচের ১০ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। নবম ও দশম ব্যাচের কর্মকর্তাদের একটি অংশ বর্তমানে সচিব পদে কর্মরত। বিসিএস ১১তম ব্যাচ থেকে সচিব পদে পদোন্নতির জন্য ফিটলিস্ট তৈরি করা হয়েছে। অথচ নবম, দশম ও ১১তম ব্যাচের অনেকেই এখনো অতিরিক্ত সচিব হতে পারেননি। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা রয়েছে। এ ছাড়া গতকালের পদোন্নতির তালিকায় বিসিএস
ইকোনমিক ক্যাডারের ১২ জন, অন্যান্য ক্যাডারের ১১ জন এবং বিসিএস ১৩তম ব্যাচের ৪১ জন পদোন্নতি পেয়েছেন। অথচ এই ব্যাচের মোট কর্মকর্তা ২৩৪ জন। তাদের মধ্যে গত বছর ৯৮ জন অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। বাকি ১৩৬ জনের মধ্য থেকে গতকাল মাত্র ৪১ জন পদোন্নতি পান। ফলে এবারও পদোন্নতি বঞ্চিত ১৩ ব্যাচের কর্মকর্তারা চরম হতাশ।
এদিকে কর্মকর্তারা জানান, জনপ্রশাসনে অতিরিক্ত সচিবের স্থায়ী পদ ২১২টি হলেও নতুন পদোন্নতির ফলে অতিরিক্ত সচিবের সংখ্যা দাঁড়াল ৫০৮ জনে। সরকার চাইলেও এর বেশি পদোন্নতি দিতে পারছে না। পদোন্নতিপ্রাপ্ত বিদেশে কর্মরত দুই কর্মকর্তা হলেন, সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার অ্যান্ড এইচওসি পদে থাকা ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এবং জার্মানি দূতাবাসের মিনিস্টার (পলিটিক্যাল) মো. মুর্শীদুল হক খান।
সূত্র জানায়, প্রশাসনে বিসিএস ১৯৮৪ ব্যাচ থেকে ১৩তম ব্যাচ পর্যন্ত সাতটি ব্যাচে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি যোগ্য যুগ্ম সচিব ৩৮৭ জন। তাদের মধ্যে থেকে মাত্র ৯২ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। বঞ্চিতরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলছেন, সারাজীবন মানুষের জন্য কাজ করেও তারা যোগ্য সম্মান পাননি। এটি তাদের জন্য খুবই লজ্জার। কোনো অপরাধে বারবার পদোন্নতি বঞ্চিত হচ্ছেন তাও তাদের বোধগম্য নয়। বর্তমানে বিসিএস ১৯৮৪ ব্যাচ থেকে দশম ব্যাচের কর্মকর্তাদের একটি অংশ সচিব পদে কর্মরত। অথচ এসব ব্যাচের প্রায় শতাধিক কর্মকর্তা এখনো যুগ্ম সচিব। অজ্ঞাত কারণেই তারা দীর্ঘ বছর ধরে পদোন্নতি বঞ্চিত।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে অতিরিক্ত সচিবের স্থায়ী পদ আছে ২১২টি। নতুন করে পদোন্নতির পর জনপ্রশাসনে অতিরিক্ত সচিবের সংখ্যা দাঁড়াল ৫০৮ জনে। এতে জনপ্রশাসনের উল্টো পিরামিড কাঠামো আরও ভারসাম্য হারাবে। তবু কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিতেই হবে। কারণ পদ থাকুক আর নাই থাকুক, চাকরিজীবনে সময়মতো পদোন্নতি না পেলে কর্মকর্তারা কাজে উৎসাহ পান না। ক্ষোভ ও হতাশা থেকে তারা নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
যোগ্যদের মধ্য থেকে মাত্র ৯২ জন কেন পদোন্নতি পেলেন, বাকিরা কেন বঞ্চিত হলেন তা জানতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এপিডি) মো. আনিসুর রহমান মিঞাকে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও সিনিয়র সচিবেরও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877